অস্তিত্ব প্রত্যক্ষ নির্ভর – এই তত্ত্বটি ব্যাখ্যা ও পরীক্ষা কর।

অস্তিত্ব প্রত্যক্ষ নির্ভর”- এই তত্ত্বটি ব্যাখ্যা ও পরীক্ষা কর।

 উদ্দেশ্য

এই পাঠশেষে আপনি • বস্তুর অস্তিত্ব মনের উপর নির্ভরশীল, নাকি এর স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে। তা ব্যাখ্যা করতে পারবেন।

• বাস্তববাদের বিশেষত সরল ও প্রতীকী বাস্তববাদের ত্রুটিগুলি কোথায়? তা উল্লেখ করতে পারবেন।

ভূমিকা

পূর্ববর্তী ইউনিটে আমরা জ্ঞানের উৎপত্তিবিষয়ক মদ নিয়ে আলোচনা করেছি। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে, জ্ঞান কী? উত্তরে আমরা বলি, জ্ঞাতার সাথে জোরা নতুর সম্পর্কই জ্ঞান। যে জানে তাকে বলে জ্ঞাতা, আর যে বন্ধুকে জানা হয় তাকে বলে জোয়। এই জেয় বস্তুর অস্তিত্ব কি জানার উপর নির্ভরশীল, নাকি এর স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে? এ প্রশ্নে দার্শনিকদের মধ্যে মতভেদের কারণে দুটি দার্শনিক মতবাদের উত্তর হয়েছে (১) (Realism) ও (২) ভাববাদ (Idealism)। আমরা বর্তমান পাঠে সাধারণভাবে বাস্তববাদ এবং বিশেষভাবে তার দুটি প্রকার নিয়ে আলোচনা করবো।

বাস্তববাদ (Realism)

বাস্তববাদী দার্শনিকদের মতে, বস্তু কোন কারণেই জানার উপর নির্ভরশীল নয়। কেউ বন্ধুকে জানুক বা না জানুক তাতে বস্তুর কিছু যায় আসে না; বরং এর স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে। বন্ধু জ্ঞানের বিষয় হতে পারে, তাই বলে বস্তুর অস্তিত্ব জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল নয়। যেমন আমেরিকা আবিষ্কার হওয়ার আগে কেউ আমেরিকাকে জানত না। তাই বলে তখন আমেরিকা ছিল না, একথা বলা যাবে না। 

বাস্তববাদীরা প্রথমত বলেন, জ্ঞানের বিষয় না থাক কোন জ্ঞানই হয় না। বিষয় বা আরাই নিয়ন্ত্রিত (determined) হয়ে থাকে। কিন্তু বিষয় বা বস্তুর অস্তিত্ব কখনই জ্ঞানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না। ছাড়াও বন্ধু থাকতে পারে।

বস্তুর সাথে জ্ঞানের সম্পর্ক বাহ্যিক

বাস্তববাদীদের দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, বস্তুর সাথে জ্ঞানের কোন আন্তর সম্পর্ক নেই। যখন কোন বস্তু অন্য একটি বস্তু ছাড়া কখনই থাকতে পারে না, তখন তাদের সম্পর্ককে বলা হয়। আন্তর সম্পর্ক। যে কোন বন্ধুই কোন মানুষের জ্ঞানের বিষয় না হয়ে থাকতে পারে। যেমন-আমেরিকা আবিষ্কারের আগেও আমেরিকা ছিল, কিন্তু মানুষ না।

বাস্তববাদীদের তৃতীয় কথা হচ্ছে, বস্তুর সংখ্যা একাধিক ভিন্ন ভিন্ন মানের ভিন্ন ভিন্ন বস্তু। আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বন্ধুই জানি। এই সমস্ত বস্তুরই জনাতিরিক্ত সত্তা আছে। সুতরাং বছর অসংখ্য স্বীকার করতেই হয়।

সকল বাস্তববাদী বস্তুর উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি স্বীকার করেন। কিন্তু বন্ধু কতটুকু পরিমাণে জ্ঞান থেকে স্বতন্ত্র এবং বন্ধুকে কিভাবে জানা যায়, তা নিয়ে বাস্তববাদীদের মধ্যে মত বিরোধের কারণে আমরা বাস্তববাদের বিভিন্ন শ্রেণী দেখতে পাই।

(১) সরল বা (২) প্রতীকবাদ (৩) না বাবা (৪) ণিচার । 

বাস্তববাদীরা প্রথমত বলেন, জ্ঞানের বিষয় না থাকলে কোন জ্ঞানই হয় না। জ্ঞান বিষয়ের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত (determined হয়ে থাকে। কিন্তু বিষয় বা বস্তুর অস্তিত্ব কখনই জ্ঞানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছাড়া বন্ধু থাকতে পারে।

বস্তুর সাথে জ্ঞানের সম্পর্ক বাহ্যিক

বাস্তববাদীদের দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, বস্তুর সাথে জনের কোন আন্তর সম্পর্ক নেই। যখন কোন নয় অন্য একটি বস্তু ছাড়া কখনই থাকতে পারে না, তখন তাদের সম্পর্ককে বলা হয়। আন্তর সম্পর্ক। যে কোন বস্তুই কোন মানুষের জ্ঞানের বিষয় না হয়ে থাকতে পারে। যেমন- আমেরিকা আবিষ্কারের আগেও আমেরিকা ছিল, কিন্তু মানুষ শুধু না।

বাস্তববাদীদের তৃতীয় কথা হচ্ছে, বস্তুর সংখ্যা একাধিক ভিন্ন ভিন্ন মানের ভিন্ন ভিন্ন বন্ধু।

আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বন্ধুই জানি। এই সমস্ত বন্ধুরই জনাতিরিক্ত সত্তা আছে। সুতরাং বছর অসংখ্য স্বীকার করতেই হয়। সকল বাস্তববাদী বস্তুর উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি স্বীকার করেন। কিন্তু বন্ধু কতটুকু পরিমাণে জ্ঞান থেকে স্বতন্ত্র এবং বস্তুকে কিভাবে জানা যায়, তা নিয়ে বাস্তববাদীদের মধ্যে মত বিরোধের কারণে আমরা বাস্তববাদের বিভিন্ন শ্রেণী দেখতে পাই

(১) সরল বা (২) প্রতীকবাদ (৩) মরা বাস্তবা (B) |

সরল বাবা (Naive Realism)

সরল বাস্তববাদীদের মতে, বিষয়ের প্রবাড় ও গ উভয়ই জানাতিরিক। আমরা বন্ধুর যে গুণ জানি তার সবই বন্ধুতেই বর্তমান থাকে। বন্ধুতে নেই এমন গুণ কখনই জানা যায় না। বিষয় বন্ধু না न জ্ঞান হয় না। বিষয় সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান বিষয় অনুযায়ী হ থাকে।

আমরা আমাদের বিভিন্ন ইন্দ্রিয় নিয়ে সরাসরি বিষয় জানতে পারি। আমরা যা কিছু সরাসরি

জানি তা সবই সত্য। এই মতবাদে সাধারণ লোকের সরল ধারণার প্রতিফল পাওয়া যায়,

তাই এই মতবাদের নাম র ान।

(১) এই মতবাদ সত্য হলে আমাদের কখনই ভুল জ্ঞান হতো না। এ মতবাদ অনুসারে বিষয়

না থাকলে জ্ঞানই হয় না। কিন্তু আমরা অনেক সময় যেখানে কিছু নেই সেখানে ভুল মতানুসারে, বন্ধুর সমস্ত গুণই বন্ধুগত। নিউটনের মতে, বস্তুর সময় গুণই বন্ধুপত

নয়: রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ ইত্যাদি জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। তাছাড়া একই জিনিস

কারো কাছে খুব স্বাদের এবং কারো কাছে একেবারে স্বাদের নয় মনে হয় কিন্তু একই

এবং স্থান হতে পারে

প্রতীকবাদ (Representationism) বা বৈজ্ঞানিক বাস্তব (Scientific Realism)

দার্শনিক জন লক এ মতবাদের প্রবর্তক। তাঁর মতে, বস্তুর কতগুলি শুন বন্ধুগত, আর

কতগুলি গুণ নাভিত যে সমস্ত গুণ বস্তুগত তাদের নাম মুখ্য of primary qualities) |

বন্ধুর আয়তন, সংখ্যা, ঘনত্ব প্রভৃতি গুণকে মুখ্য গুণ বলা হয়। রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ ইত্যাদি

হলো গৌণ গুণ (secondary qualities) পক গুণের অধিষ্ঠানরূপে প্রবাকে স্বীকার করেন।

তাঁর মতে, বস্তুর দ্রব্যত্ব ও মুখ্য গুণগুলি জানের উপর নির্ভরশীল নয়। তবে গৌণ

একান্তভাবেই আননির্ভর।

প্রতীক বা ধারণা

সরল বাস্তববাদের ত্রুটি দূর করার জন্য লক প্রতীকবাদের প্রবর্তন করেন। তাঁর মতে, আমরা

কোন কিছুই সরাসরি জানতে পারি না। তাঁর মতে, বাইরের বস্তুর যে ছাপ বা প্রতীক ইন্দ্রিয়

পরে মনের পর্দায় পড়ে তাই আমরা জানতে পারি। আর যখন কোন প্রতীক বা ধারণা (ideas)

জানি তখন এর পেছনে যে বস্তু আছে, তাও জানি। সুতরাং জ্ঞান প্রতীক বা ধারণার মাধ্যমেই

হয়ে থাকে। যখন এই প্রতীক বা ধারণার সাথে বাইরের বস্তুর মিল হয় তখনই জ্ঞান সত্য হয়,

আর যখন মিলে না তখন জ্ঞান মিথ্যা হয়।

সমালোচনা

(১) লক প্রতীকবাদের পতন করে বাস্তববাদের गবনিকা টেনেছেন। কারণ

মতবাদের উপর ভিত্তি করেই বাবলি বলেন, যা আমরা সরাসরি জানি তা সবই যদি

আমাদের ধারণা হয়, তবে একমাত্রা ধারণাই আছে একথা স্বীকার কর ।

একমাত্র ধারণাই সত্য, জানাতিরিক্ত বন্ধু বলে কিছু নেই, একথা বললে ৰাস্তাদেরই

(২) লকের মত স্বীকার করলে জ্ঞানের সত্যাসত্য নিরূপণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাঁর

মতে, ধারণার সাথে বস্তুর মিল হলে জ্ঞান সত্য হবে। অথচ তিনি বলেন, বস্তু সরাসরি

জানা যায় না। যে বস্তু সরাসরি জানা যায় না, তার সাথে ধারণার মিল বা অমিল জানা

Leave a Comment