অ্যালবেডো কি ? উচ্চতা অনুসারে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস ব্যাখ্যা কর।

অ্যালবেডো কি ? উচ্চতা অনুসারে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস ব্যাখ্যা কর।

অ্যালবেডো কি ? 

সূর্য থেকে পৃথিবীতে যে তাপশক্তির এসে পৌঁছয় তার শতকরা ১৯ ভাগ বায়ুমণ্ডল প্রত্যক্ষভাবে শোষণ করে নেয় এবং শতকরা ৪৭ ভাগ ভূপৃষ্ঠে এসে পৌঁছায় । অর্থাৎ সূর্য থেকে পৃথিবীতে আগত তাপশক্তির শতকরা ৬৬ ভাগ তাপশক্তি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে তোলে । একে কার্যকরী সৌর বিকিরণ (Effective Solar Radiation) বলে । অবশিষ্টাংশ অর্থাৎ শতকরা ৩৪ ভাগ তাপশক্তির ২৫ ভাগ মেঘপুঞ্জ থেকে, ৭ ভাগ বায়ুমণ্ডল থেকে এবং ২ ভাগ ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত ও বিচ্ছুরিত হয়ে ক্ষুদ্র তরঙ্গরূপে আবার মহাশূন্যে ফিরে যায় । এই ৩৪ ভাগ সূর্যশক্তি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করতে পারে না । পৃথিবী থেকে সূর্যরশ্মির প্রত্যাবর্তনের এই প্রাকৃতিক ঘটনাকে অ্যালবেডো বলে । অর্থাৎ পৃথিবীর গড় অ্যালবেডো হল ৩৪% ।

বায়ুমণ্ডল বিভিন্ন গ্যাসের মিশ্রণে গঠিত। এই গ্যাসগুলির মিশ্রণের অনুপাতও আবার সর্বত্র একই রকম হয় না। ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুম গুলের ঘনত্ব কমতে থাকে। এর ফলে অপেক্ষাকৃত কম ঘনত্বেরা গ্যাসগুলি বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে অবস্থিত হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। আগত সৌর বিকিরণের ক্ষেত্রে আবার বিভিন্ন গ্যাস ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করে। যেমন- O, ক্ষুদ্রতরঙ্গের অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ করে এবং CO, দীর্ঘতরঙ্গের বিকিরণকে শোষণ করে। আবার, বায়ুমণ্ডলের উপরিস্থিত স্তরগুলিতে সৌর বিকিরণের প্রভাবও অধিক। এসব কারণে ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বৃদ্ধিতে উচ্চতার তারতম্য লক্ষ করা যায়। উন্নতার তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলে এটি সুস্পষ্ট স্তর সৃষ্টি হয়েছে। (চতুর্থ অধ্যায়ে চিত্র 4.3- বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধিতে উচ্চতার হ্রাসবৃদ্ধি তুলে ধরা হয়েছে।

1. ট্রপোশিয়ার : এটি ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তর। এর গড় উচ্চতা ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 11 কিমি। এই ত্তরের প্রতি কিমি উচ্চতা বৃদ্ধিতে উচ্চতা গড়ে “ে সেট হারে কমতে থাকে এবং এর সর্বোচ্চ সীমায় উচ্চতা কমে 80° সেঃ তে এসে পৌঁছায়। আমরা জানি বানুতাপের কুপরিবাহী। তাই বায়ুমণ্ডল আগত সৌর বিকিরণ। সরাসরি শোষণ করতে পারে না এবং খুব একটা উত্তপ্ত হয় না। বায়ুমণ্ডলের এই স্তরটি পরিচলন, পরিবহণ ও বিকিরণ পদ্ধতিতে উত্তপ্ত হন। তবে সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত হয় পরিচলন পদ্ধতিতে। ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হলে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ু প্রথমে উত্তপ্ত হয় এবং হালকা হয়ে আয়তনে বৃদ্ধি পায় ফলে ঘনত্ব কমায় ঊর্ধ্বমুখী হতে বালা হয়। এই অবস্থায় ওপরের দিকের তুলনামূলক শীতল ও খানকায়ু নিম্নমুখী হয়ে এই স্থান দখল করে। ক্রমাগত এই প্রক্রিয়ায় পুনরাবৃত্তির দ্বারা ধীরে ধীরে সমগ্র বায়ুমণ্ডল উর হয়ে ওঠে। তবে এটিও ঠিক যে মোট গ্যাসীয় উপাদানের 759% এবং জলীয় বাষ্প ও ধুলিকনার 99% এই স্তরেই রয়েছে। বায়ুমণ্ডলের উচ্চ বৃদ্ধির সঙ্গে এদের পরিমাণও কমতে থাকে। ফলে এর ঘনত্বও কমে আসে। তাই উচ্চতা বৃদ্ধিতে উচ্চতাও হ্রাস পায়। এই উচ্চতা হ্রাসপ্রাপ্তির হার প্রতিকিমিতে গড়ে 6.4° সেঃ- একে স্বাভাবিক তাপবিযুক্তিয়ার (Normal Lapse Rate) বলে। কিন্তু বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক তাপবিযুক্তিহারের বৈপরীত্য দেখা যায়। অর্থাৎ, উচ্চতা বৃদ্ধিতে উয়তা বৃদ্ধি পায়। একে উন্নতার বৈপরীত্য বা বৈপরীত্য উত্তাপ (Inversion of temperature) বলে। পার্বত্য উপত্যকায় মেঘমুক্ত রাতে এই পরিস্থিতি সর্বাধিক লক্ষ করা যায়। এবারে ভূপৃষ্ঠ রাতে তাপ বিকিরণ করলে সংলগ্ন বায়ু উর্দু ও হালকা হয়ে উর্ধ্বমুখী হয় এবং অপেক্ষাকৃত ভারী শীতল বায়ু পর্বতের ঢাল বেয়ে নিম্নমুখী হয়। এই শীতল বায়ুকে ক্যাটাবেটিক বায়ু (Katabetic Wind) বলে। এই কাটাবেটিক বায়ুর প্রভাবে উপত্যকার নিম্নভাবে উচ্চতা অনেকটা কমে আসে এবং উপত্যকা বরাবর যত ওপরের দিকে ওঠা যায় উয়তা ততই বৃদ্ধি পেতে থাকে ।
2. স্ট্যাটোস্ফিয়ার : ট্রপোস্ফিয়ারের ঠিক ওপরের এই স্তরটিতে বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা উচ্চতা বৃদ্ধিতে প্রমাগত বাড়তে থাকে এবং স্ট্যাটোস্ফিয়ারের সর্বোচ্চ উচ্চতায় উন্নতা বেড়ে প্রায় 0° সেঃ তে এসে পৌঁছায়। এই স্তরে উন্নতা বৃদ্ধির প্রধান কারণ ওজোন গ্যাসের (O) উপস্থিতি। ভূপৃষ্ঠ থেকে 15-35 কিমি উচ্চতায় ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি থাকে। ওজোন গ্যাস সূর্য থেকে আগত সৌর বিকিরণের ক্ষুদ্র তরঙ্গের অন্তর্গত অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ করতে সক্ষম। এই কারণে স্ট্যাটোস্ফিয়ারের উচ্চতা উচ্চতা বৃদ্ধিতে বাড়তে থাকে। 
3. মেসোস্ফিয়ার : স্ট্যাটোস্ফিয়ারের এপরে মেসোগিনার আটিতে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে আবার
তাপমাত্রা পুনরায় কমতে থাকে এবং ৪০ কিমি উচ্চতার তাপমাত্রা হ্রাস পেয়ে সে চলে আসে। বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে বায়ুর ঘনত্ব খুব কম থাকা সৌরশক্তি তেমনভাবে শোষণ করতে পারে না। উপরন্তু, ভুপৃষ্ঠ থেকে এই স্তর এতটাই ওপরে অবস্থিত যে পরিচলন পদ্ধতিতে তাপপ্রবাহ এখানে এসে পৌঁছায় না। এই স্তরে বায়ুর চাপও তাই অত্যন্ত কম। 50 কিমি উচ্চতায় বায়ুচাপ যেখানে গড় সমুদ্রতলের সাপেক্ষে / ভাগ বা 1 মিলিবার সেখানে 80 কিমি উচ্চতায় / ভাগ .001 মিলিবার। সুতরাং বায়ুচাপ কম থাকায় বায়ুর ঘনত্বও কমে যায়।
4. মেসোস্ফিয়ারের পরবর্তী এই থার্মোমির স্তরটিতে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে থাকে। মহাশূন্যের মধ্য দিয়ে আসা সৌর বিবিনাশ সর্বপ্রথম বায়ুমণ্ডলের এই স্তর ভেদ করায় বেশ কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়া, আয়নিতকরণ পদ্ধতি ইত্যাদির কারণে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হওয়ায় এই ভয়ে তাপমাত্রা অত্যন্ত সুতহারে বাড়তে থাকে। থার্মোশিয়ারে যেখানে 120 কিমি উচ্চতায় তাপমাত্রা থাকে প্রায় 500° সেঃ হয়, সেখানে 200 কিমি উচ্চতায় তা বেড়ে দাঁড়ায় 7000 সো 480 কিমি উচ্চতায় 1232 সেন। প্রধানত সূর্য থেকে আগত হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের মুক্ত ইলেকট্রন সমন্বিত সৌর ঝড়ের প্রভাবে থার্মোস্ফিয়ারে অবস্থিত নাইট্রোজেন ও অক্সিজেন পরমাণু বিশ্লিষ্ট ও আয়নিত হয়ে পড়ে। উপরন্তু অনুর ঘনত্ব কম থাকারা এদের মুক্ত ইলেকট্রনের গড় মুখ প্রবাহ পথ (free meanpath) অনেকটাই – 3/8 ফলে মুগ্ধ ইলেকট্রনগুলি অত্যন্ত দ্রুতগতিশক্তি লাভ করে, যা বায়ুমণ্ডলে তাপের সময় ঘটায়।

Leave a Comment