Help Bangla

Blogs in Bangali

উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলের কার্যাবলী কি কি

উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলের কার্যাবলী কি কি

উদারনৈতিক গণতন্ত্র বলতে এমন একটি সংকীর্ণতামুক্ত আদর্শকে বোঝায় যেখানে রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিতে গিয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়টিও সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়েছে। সপ্তদশ শতাব্দীকে উদারনৈতিক গণতন্ত্রের প্রারম্ভিক কাল হিসেবে গণ্য করা হয়। এই গণতান্ত্রিক ধারণাটি ছিল সনাতন উদারনৈতিক গণতন্ত্রের ধারণা। সাধারণভাবে ধরা হয় যে, জন স্টুয়ার্ট মিলের পূর্ববর্তী সময়ে উদারনৈতিক গণতন্ত্রের দার্শনিকরা যে গণতন্ত্রের প্রচার করেন তা সাবেকি গণতান্ত্রিক রীতি নামে পরিচিত। কিন্তু জন স্টুয়ার্ট মিলের পরবর্তীকালে প্রচারিত গণতন্ত্রকে বলা হয় আধুনিক গণতান্ত্রিক রীতি। ফাইনার উদারনৈতিক গণতন্ত্রকে শতাধীন প বলেছেন। উদারনৈতিক গণতন্ত্রের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি হল

[1] রাজনৈতিক সাম্যকে গুরুত্বদান: উদারনৈতিক গণতন্ত্রের মূল বৈশিষ্ট্য হল রাজনৈতিক সাম্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা। এই ধরনের গণতন্ত্রে সংবিধান ও গণতান্ত্রিক ধরনের হয়ে থাকে। কারণ আপামর জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা সংবিধান দ্বারাই সম্ভব। গণতান্ত্রিক সংবিধানে স্বীকৃত হয় জাতিধর্মবর্ণ, নারী পুরুষ বা ধনী-দরিদ্রের সমান অধিকার। এই ধরনের গণতন্ত্রে প্রাপ্তবয়স্ক সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ভোটে যে, সরকার গঠিত হয় সেই সরকারকে শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠের সরকার বলা যায় না। সেই সরকার নিয়োজিত থাকে সকল ব্যক্তির কল্যাণে।

12] শাস্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে সরকার পরিবর্তন: উদারনৈতিক গণতন্ত্রে সরকার হল সকল জনগণের জন্য নিয়োজিত সরকার। যার কাজ হল সকলের কল্যাণসাধন। কিন্তু সরকার জনকল্যাণবিরোধী কোনো কাজ করলে জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে সেই সরকারের পরিবর্তন করে নতুন সরকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। এই পরিবর্তনের জন্য কোনোরূপ বিপ্লব বা হিংসাত্মক পথ অবলম্বনের প্রয়োজন নেই। উদারনৈতিক গণতন্ত্রে সরকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিপ্লব ও হিংসার পথকে সমালোচনা করা হয়। 

(3) সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনব্যবস্থা: উপারনৈতিক হয় সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন কমিটি ব্যবস্থা, ক্যাবিনেট বা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা— সকলের পিছনেই রয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠের গণতন্ত্রে উত্তরাধিকার সংক্রান্ত কোনো প্রতিনিধির স্থান নেই। এই ধরনের গণতন্ত্রে আতি, ন কক্ষত্রেও কোনোপ্রকার বৈষম্য থাকে না। তাপস্থান, ধর্ম, সম্প্রতি

(4) সংখ্যালঘুর অধিকারের স্বীকৃতি, উদারনৈতিক গণতন্ত্রে সংখ্যালঘুর অধিকারকে মেনে নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যাতে সাংস্কৃতিক প্রভৃতি দিক থেকে বঞ্চিত না হয় তারজন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আইনত বা সাংবিধানিকভাবে তাদের ি প্রকার অধিকার প্রদান করা হয়েছে এবং একইসঙ্গে সেইসব অধিকারকে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এইভাবে সংখ্যালঘুর স্বার্থকে সংরক্ষণ করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সা নিয়ে এসেছে।

[[3] শাসনতন্ত্রের প্রাধান্য গারনৈতিক গণতন্ত্র করি ওপর প্রতিষ্ঠিত। নীতিতে সরকারের তিনটি বিভাগের কথা বলা হয়েছে। যথা—[1] শাসন বিভাগ, [2] আইন বিভাগ এবং 3 ভাগ তিনটি বিভাগ পৃথক থেকে কাজ করে। সরকারের এই তিনটি বিভাগের কাজ শাসনতন্ত্রে নির্দিষ্ট করা থাকে। আবার যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাজের তালিকা শাসনতন্ত্রে লিপিবন্ধ থাকে। তা ছাড়া নাগরিকের মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি শাসন উল্লিখিত থাকে। এসব কারণে উদারনৈতিক গণতন্ত্রে শাসনতন্ত্র হল একটি পূর্ণ

(চ) নিরপেক্ষ আদালতের প্রাধান্য: উদারনৈতিক গণতন্ত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় বলে নিরপেক্ষ আদালতের প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। এই আদালতের দুটি কাজ উল্লেখযোগ্য। गा [1] নাগরিকদের মৌলিক অধিকারসমূহ সংরক্ষণ করা = [2] সংবিধানের রক্ষাকর্তা ও ব্যাখ্যাকর্তা হিসেবে কাজ করা। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যের কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের অথবা একাধিক রাজ্যের ও কেন্দ্রের বিভিন্ন বিরোধ মীমাংসার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ আদালতের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তা ছাড়া নিরপেক্ষ আদালত সামাজিক পরিবর্তনের দিকে গুরুত্ব দিয়ে আইন বিভাগকে প্রভাবিত করতে পারে।

[] ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা: উদারনৈতিক গণতন্ত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আইনের অনুশাসনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। উদারনৈতিক গণতন্ত্রে এক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। যেমন—[1] আইনের দৃষ্টিতে প্রত্যেকে সমান, [2] আইনের দ্বারা সমভাবে সংরক্ষণ।

[8] ভোটদানের স্বীকৃতি: উদারনৈতিক গণতন্ত্রে সার্বিক প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকার স্বীকৃত হয়। জাতিধর্মবর্ণ ডগ্রী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রায় সকল মানুষই ভোটদানের অধিকারটি ভোগ করেন।

সমালোচনা

উদারনৈতিক গণতন্ত্রের তত্ত্বটি বিভিন্ন দিক থেকে সমালোচিত হয়েছে। এই তত্ত্বের সমালোচকরা মনে করেন যে, সাধারণ জনগণের মধ্যে এখানে যে রাজনৈতিক সাম্যের কথা বলা হয়েছে বাস্তবে তা ঠিক নয়। কারণ বাছবে সমাজে প্রতিষ্ঠরাই রাজনৈতিক ক্ষমতা ভোগ করে। তা ছাড়া উদারনৈতিক গণতন্ত্রকে কোনো কোনো সমালোচক অবাচন বলে অভিহিত করেছেন। কারণ এই ধরনের গণতন্ত্রে বারি ও সমাজ সম্পর্কে যে কথা বলা হয় তা কল্পবাদী চিন্তাধারার দ্বারা আচ্ছন্ন। একে বাস্তবায়নের মতো কোনোরূপ বাবস্থা নেই। হেনরি মেইন বলেছেন, এই ধরনের গণতন্ত্রের বিশেষ স্থায়িত্ব নেই। তা ছাড়া রূপ করস্থায় পরস্পরবিরোধী স্বার্থ বিরাজমান। 

রাজনৈতীক দলের কার্যাবলী : 

কেন্দ্রের প্রাধান্য: এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে রাষ্ট্রের যাবতীয় কার্যপরিচালনার দায়িত্ব না থাকায় কেন্দ্রীয় সরকারই হবো। তবে কখনো কখনো সুবিধার জন্য আতিক সরকার গঠন করলে এই আতিক সরকারের অ কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছার ওপর নিজের করে। আঞ্চলিক সরকারগুলি কোনোরূপ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে না। কেন্দ্রীয় সরকার যেসব দায়িত্ব কেবল সেই দায়িই পালন করে। আর তেলে দেয়, আঞ্চলিক সরকার

[2] সংবিধানের প্রাধানহীনতা: এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্য থাকে না। যুক্তরাষ্ট্রে যেমন কেন্দ্রে রাজ্যগুলির ক্ষমতা সংবিধানের ধারা বঞ্চিত করা এবং এই ব্যাপারে কেন্দ্র ও এক বা একাধিক রাজ্যের মধ্যে কোনো বিচার বিভাগ সেইসব বিরোধের নিষ্পত্তি করে, এককেন্দ্রিক ব্যবস্থায় সেরূপ হয় না। এককেন্দ্রিক ব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্য থাকে না বলে বিচার বিভাগও পুরুষহীন হয়ে পড়ে। তা ছাড়া কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সংবিধা হওয়ায় কোনো বিরোধেরও সম্ভাবনা থাকে না। কাজেই বিরোধ মীমাংসার জন্য বিচার বিভাগেরও কোনো প্রাধান্য থাকে না।

[3] লিখিত ও অলিখিত সংবিধানের প্রাধান্য: এককেন্দ্রিক ব্যব বা অলিখিত যে

কোনো প্রকার হতে পারে। যেমন- নিউটন প্রভৃতি দেশের সংবিान লিখিত। অদাদিকে, যুবার সংবিধান প্রধানত অলিখিত। তবে গ্রুপ ত হলেও অলিখিত বিষয়ও বিশেষ প্রাধান্য পায়। [4] সংবিধানের সুপরিবর্তনীয়তা: এককেন্দ্রিক বিধান পরিবর্তনীয় প্রকৃতি সম্পন্ন হয়।

সংবিধান খুব সহজেই পরিবর্তন করা যায়। অর্থাৎ এককেন্দ্রিক ব্যবস্থায় সংবিধানের

প্রকৃতি পুষ্পরিবর্তনীয় না হয় সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংবিধান সংশোধন করা

সম্ভব। এককেন্দ্রিক বিধান সংশোধনের ব্যাপারে কোনো বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার

[15] ভাগ : এককেন্দ্রিক শাসনবানা না থাকায় সংবিধানের রক্ষাকর্তা ও ব্যাখ্যাকর্তা হিসেবে বিচার বিভাগের কোনো ভূমিকা থাকে না। আবার বিচার বিভাগ 

ব্যবস্থার দুর্বল প্রকৃতিসম্পন্ন হওয়ার কারণে তা কার্যত আইন বিভাগের অধস্তন হিসেবে কাজ করে। (6) কেন্দ্রীয় আইনসভার কর্তৃত্ব: এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় আইনসভা সার্বিক ক্ষমতা করে বলে সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী রুপ ব্যবস্থা সংবিধানের প্রাধান্য স্থাপিত হয় না। কেন্দ্রীয় আইনসভা তার ক্ষমতাবলে যে কোনো আইন প্রণয়ন করতে পারে, বাহির করতে পারে এবং সংশোধন করতে পারে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় আইনসভা আইন প্রণয়ন বাতিল ও সংশোধনের ক্ষেত্রে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। যেহেতু রূপ শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত থাকে না, সেহেতু কেন্দ্রীয় আইনসভা তার সংশোধন করে থাকে।

Updated: July 25, 2022 — 4:57 am

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Help Bangla © 2023 Frontier Theme