দশম শ্রেণী ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় সাজেশন 2023
দশম শ্রেণী ইতিহাস সংস্কার: বৈশিষ্ট্য মূল্যায়ন mcq প্রশ্নোত্তর
1. বামাবোধিনী’ (১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দ) পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন –
(A) উমেশচন্দ্র দত্ত
(B) শিশিরকুমার ঘোষ
(C) কৃয়চন্দ্র মজুমদার
(D) দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ
2. সাধারণ জনশিক্ষা কমিটি গঠিত হয়
(A) ১৭১৩ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে (লর্ড আমহার্স্টের উদ্যোগে)
3. নববিধান (১৮৮০ খ্রিস্টাব্দ) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন
(A) দয়ানন্দ সরস্বতী
(B) কেশবচন্দ্র সেন
(C) স্বামী বিবেকানন্দ
(D) মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
4. ‘নীলদর্পণ’ নাটকের ইংরেজি অনুবাদের প্রকাশক ছিলেন—
(A) কালীপ্রসন্ন সিংহ
(B) মাইকেল মধুসূদন দত্ত
(C) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(D) রেভারেণ্ড জেমস লঙ
5. সতীদাহ প্রথা রদ হয়—
(A) ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে
6. সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ প্রচার করেছিলেন —
(A) বিজয় গোস্বামী
(B) স্বামী বিবেকানন্দ
(C) শ্রীরামকৃষ্
(D) কেশবচন্দ্র সেন
7. ‘গ্রামবাৰ্ত্তা প্রকাশিকা’ (মাসিক পত্ৰ) প্রকাশিত হত
(A) যশোর থেকে
(B) রানাঘাট থেকে
(C) কুষ্টিয়া থেকে
(D) বারাসাত থেকে
৪. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বি.এ. পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল-
(A) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে
9. কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন—
(A) ড. এম. জে. ব্রামলি
(C) ড. এন. ওয়ালিশ
(B) ড. এইচ. এইচ. গুডিভ
(D) ড. জে. গ্রান্ট
10. প্রথম সরকারি শিক্ষা কমিশন (হান্টার কমিশন) গঠিত হয় –
(A) ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে
17. ইয়ং বেঙ্গল বা নব্যবঙ্গ বলা হত –
(A) ডিরোজিওর অনুগামীদের
(B) রামমোহনের অনুগামীদের
(C) রামকৃষ্ণের অনুগামীদের
(D) বিবেকানন্দের অনুগামীদের
18. প্রাচ্যবাদী হিসেবে পরিচিত ছিলেন—
(A) ডেভিড হেয়ার
(C) উইলিয়াম জোনস্
(B) টমাস ব্যাবিংটন মেকলে
(D) চার্লস মেটকাফ
19. দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ একটি—
(A) ব্যাঙ্গাত্মক নাটক
(B) জীবনীমূলক নাটক
(C) ধর্মীয় নাটক
(D) জাতীয়তাবোধমূলক নাটক
20. ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে বেমানান নামটি হল –
(A) রাজা রামমোহন রায়
(B) কালীপ্রসন্ন সিংহ
(C) ডেভিড হেয়ার
21. ‘ব্রহ্মানন্দ’ নামে পরিচিত
(A) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(B) রাধাকান্ত দেব
(C) কেশবচন্দ্র সেন
(D) শিবনাথ শাস্ত্রী
22. ‘নীলদর্পণ’ নাটকটি রচনা (১৮৬০ খ্রিস্টাব্দ) করেন—
(A) কালীপ্রসন্ন সিংহ
(B) মাইকেল মধুসূদন দত্ত
(C) দীনবন্ধু মিত্র
(D) রেভাঃ জেমস লঙ
আরোও পড়ুন””দশম শ্রেনী ভৌত বিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় সাজেশন 2023 ।। Class 10th physical science
23. ‘হুতোম’ কার ছদ্মনাম ?
(A) রাধাকান্ত দেব
(B) কেশবচন্দ্র সেন
(C) শিবনাথ শাস্ত্রী
(D) কালীপ্রসন্ন সিংহ
24. ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ (ইংরেজি সাপ্তাহিক) পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন—
(A) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) গিরিশচন্দ্র ঘোষ
(D) মধুসূদন রায়
দশম শ্রেণী ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
মাধ্যমিক সংস্কার বৈশিষ্ট্য মূল্যায়ন দ্বিতীয় অধ্যায় SAQ
1. বাংলায় কোন শতককে ‘নবজাগরণের শতক’ বলা হয়?
উত্তর:-উনিশ শতকে
2. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভারতীয় উপাচার্য কে ছিলেন?
উত্তর:-স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
3. কোন গভর্নর জেনারেলের আমলে বিধবাবিবাহ আইন পাস হয়?
উত্তর:-লর্ড ক্যানিং এর আমলে
4. গ্রামীণ সংবাদপত্রের জনক কোন পত্রিকাকে বলা হয়?
উত্তর:-গ্রামবার্তা প্রকাশিকা
5. নব্যবঙ্গ দলের একজন সদস্যের নাম লেখো।
উত্তর:-রসিক কৃষ্ণ মল্লিক ।। কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়
6. কোন সমাজ সংস্কারকের আন্দোলনের ফলে সতীদাহ প্রথা রদ হয়?
উত্তর: রাজা রামমোহন রায়
7. ব্রিটিশ শিক্ষানীতির মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর:-অনুগত্য কেরানি তৈরি করা
৪. চার্লস উড কে ছিলেন?
উত্তর:-কম্পানি বোর্ড অফ কন্ট্রোল সভাপতি
9. উডের নির্দেশনামা/‘উডস ডেসপ্যাচ’ কবে ঘোষিত হয়?
উত্তর:-1854 খ্রিস্টাব্দে
10. শিকাগো ধর্মসভা কবে অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর:-1893 খ্রিস্টাব্দে
আরোও পড়ুন””দশম শ্রেণী ইতিহাস প্রথম অধ্যায় সাজেশন 2023
11. শিকাগো ধর্মসভার শ্রেষ্ঠ বক্তা কে ছিলেন?
উত্তর:-স্বামী বিবেকানন্দ
12. রামকৃষ্ণ মিশন (১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দ) কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:-স্বামী বিবেকানন্দ
13. রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মুখপত্র কী ছিল?
উত্তর:-উদ্বোধন পত্রিকা
14. ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ’/ ‘ভারত পথিক’ / ‘আধুনিক ভারতের ইরাসমা কাকে বলা হয়?
উত্তর:-রাজা রামমোহন রায় কে
15. ভারতের প্রথম সংবাদপত্র কোনটি?
উত্তর:-1780 খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত বেঙ্গল গেজেট
16. বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র কোনটি?
উত্তর:-দিকদর্শন মাসিক পত্রিকা ।।
17. বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সাপ্তাহিক সংবাদপত্র কোনটি?
উত্তর:- সমাচার দর্পন
18. বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম দৈনিক সংবাদপত্র কোনটি?
উত্তর:-সংবাদ প্রভাকর
19. বৈদিক যুগে ফিরে যাও —কার উক্তি?
উত্তর:-স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
20. ‘তুফাৎ-উল-মুয়াহিদিন’—কার রচনা?
উত্তর:- রাজা রামমোহন রায়
21. ‘শ্রীরামপুর কলেজ’ কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:-উইলিয়াম কেরি ।। 1818 খ্রিস্টাব্দে
22. ভারতে ‘চুঁইয়ে পড়া শিক্ষানীতি কে চালু করেন?
উত্তর:-টমাস ব্যাবিংটন মেকলে
23. শুদ্ধি আন্দোলন কে প্রবর্তন করেন?
উত্তর:-স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী
24. সত্যশোধক সমাজ কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:- জ্যোতিবা ফুলে
25. দক্ষিণ ভারতের বিদ্যাসাগর’ কাকে বলা হয়?
উত্তর:-বির সালিঙ্গম কে দক্ষিণ ভারতের বিদ্যাসাগর বলা হয়
26. সরকারি চাকুরিতে ইংরেজি ভাষাজ্ঞান অপরিহার্য বলে ঘোষণা করেন কে?
উত্তর:-লর্ড হার্ডিঞ্জ
27. হিন্দু কলেজের একজন প্রতিষ্ঠাতার নাম লেখো।
উত্তর:- স্যার হাইড ইস্ট ।। ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দ
28. ভারতে কোম্পানির উদ্যোগে গড়ে ওঠা পাশ্চাত্য চিকিৎসাবিদ্যার প্রথম প্রতিষ্ঠানের নাম কী?
উত্তর:-কলকাতা মেডিকেল কলেজ
29. সতীদাহ প্রথা বন্ধের বিরোধিতা করে রক্ষণশীলরা কোন পত্রিকা প্রকাশ করেছিল?
উত্তর:- সমাচার পত্রিকা
30. সতীদাহ প্রথা বন্ধের সমর্থনে রামমোহন কোন পত্রিকায় জনমত গড়ে তোলেন?
উত্তর:-সম্বাদ কৌমুদী
দশম শ্রেণী ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সংস্কার: বৈশিষ্ট্য মূল্যায়ন সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর 2023
প্রশ্ন: বাংলায় নারী শিক্ষাবিস্তারে রাজা রাধাকান্ত দেবের করো। ভূমিকা বিশ্লেষণ করো
উত্তর: হিন্দু কলেজ, স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠায় অন্যতম উদ্যোগী রাজা রাধাকান্ত দেব নারী শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। বেথুন স্কুল, ডাফ স্কুল গঠনে এবং নারীদের পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করতে বিভিন্ন সভা-সমিতির আয়োজনে তাঁর ঐতিহাসিক ভূমিকা বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে।
প্রশ্ন: ভারতবর্ষীয় ব্রাসমাজ বিভক্ত হল কেন?
উত্তর: ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজবিভক্ত হয়েছিল সংস্কারের প্রশ্নে। কেশবচন্দ্র সেনের খ্রিস্টধর্মপ্রীতি, গুরুবাদের প্রতি আসক্তি, নিজের নাবালিকা কন্যা সুনীতি দেবীর সঙ্গে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের বিবাহদান প্রভৃতিকে কেন্দ্র করে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজের অভ্যন্তরে কেশবচন্দ্রের সঙ্গে তার অনুগামীদের তীব্র মতবিরোধ তৈরি হয়। এবং এরই ফলশ্রুতিতে আনন্দ মোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী, বিজয়কৃয় গোস্বামী প্রমুখ তরুণ অনুগামীরা ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ ত্যাগ করে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হন।
প্রশ্ন: মেকলে মিনিট’ কী?
উত্তর :১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শিক্ষা বিষয়ক দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। এমতাবস্থায় জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি টমাস ব্যাবিংটন মেকলে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা সংক্রান্ত যে বিখ্যাত প্রতিবেদন পেশ করেন তা ‘মেকলে মিনিটস’ নামে পরিচিত। এই প্রতিবেদনে মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং বলেন যে, উচ্চ ও মধ্যবিত্তের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষা বিস্তৃত হলে ‘Filtration theory’ অনুযায়ী তা ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।
প্রশ্ন: সমাজ সংস্কারে নব্যবঙ্গদের ভূমিকা কী ছিল?
উত্তর : হিন্দু কলেজের শিক্ষক ডিরোজিও এবং তাঁর অনুগামী ছাত্ররা যাঁরা ইয়ংবেঙ্গল নামে পরিচিত ছিলেন তাঁরা হিন্দু ধর্মের প্রচলিত কুসংস্কার ও ধর্মীয় সংকীর্ণতার বিরোধীতা করেছিলেন। এঁরা মূলত যুক্তিবাদী ও প্রগতিপন্থী ছিলেন। তাঁরা যেমন মূর্তি পূজা, উপবীত ধারণের বিরোধিতা করেছিলেন তেমনি স্ত্রী শিক্ষার প্রসার, বাক্ স্বাধীনতার স্বপক্ষে সোচ্চার হয়েছিলেন।
প্রশ্ন: সংবাদপত্র এবং সাময়িক পত্রের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর- রোজকার ঘটে যাওয়া ঘটনার বিবরণ থাকে দৈনিক সংবাদপত্রে, সংবাদপত্র মূলত প্রতিবেদন মূলক; অন্যদিকে সাময়িক পত্র হল বিশ্লেষণধর্মী এবং এটি সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক এমনকি বার্ষিক সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
প্রশ্ন : মধুসুদন গুপ্ত কে ছিলেন?
উত্তর : মধুসূদন গুপ্ত ছিলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজের একাধারে ছাত্র ও শিক্ষক। এখানে থাকাকালীন ছাত্রাবস্থায় সমস্ত সামাজিক প্রতিবন্ধকতা ও গোঁড়ামিকে উপেক্ষা করে ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি তিনি প্রথম বাঙালি ছাত্র হিসেবে ‘শব’ ব্যবচ্ছেদ করেন যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে তিনি এখান থেকে ডাক্তারি পাস করেন। ‘ফার্মাকোপিয়া’ ও ‘অ্যানাটমি’ নামক ইংরেজি গ্রন্থ দুটির যথাক্রমে বাংলা ও সংস্কৃতে অনুবাদ তাঁর অন্যতম কীর্তি।
প্রশ্ন: নববিধান’ কী?
উত্তর : শ্রীরামকৃষ্ণদেবের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ব্রায় নেতা কেশবচন্দ্র সেন সর্বধর্মসমন্বয়ের লক্ষ্যে ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে ‘নববিধান’ ঘোষণা করেন। হিন্দুধর্মের সনাতন রীতি-নীতি ও পদ্ধতি-প্রকরণের সঙ্গে বৈয়ব ও খ্রিস্টধর্মীয় আদর্শের সংমিশ্রণে তাঁর এই ‘নববিধান’ ঘোষিত হয় এবং তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘নববিধান ব্রাহ্মসমাজ’।
প্রশ্ন: এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের প্রধান উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর : এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে খ্রিস্টান মিশনারীদের প্রথম তথা প্রধান উদ্দেশ্য ছিল খ্রিস্ট ধর্মের প্রচার। বস্তুতপক্ষে, খ্রিস্টের বাণী ও ধর্মোপদেশ সাধারণ ভারতবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। তবে ধর্ম প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে সামান্য পরিমাণে হলেও তাঁরা এদেশে আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষা প্রদান করেছিলেন এবং সরকারি উদ্যোগের অন্তত তিন দশক পূর্বেই এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের গুরুদায়িত্ব তাঁরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন।
প্রশ্ন: নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী কাদের বলা হত? নব্যবঙ্গ আন্দোলন কাকে বলে ?
উত্তর- হিন্দু কলেজের তরুণ ও মননশীল অধ্যাপক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও-র নেতৃত্বে ওই কলেজের একদল ছাত্র উনিশ শতকের প্রথমার্ধে হিন্দু ধর্ম ও সমাজের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেন এবং পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণে মেতে ওঠেন। তাঁরা ‘নব্যবঙ্গ নামে পরিচিত এবং তাঁদের পরিচালিত আন্দোলনই হল ‘নব্যবঙ্গ আন্দোলন।
প্রশ্ন : Filtration theory’ বা ‘ম্ন পরিস্তুত নীতি’ বলতে কী বোঝো?
উত্তর: লর্ড বেন্টিঙ্কের আইন সচিব ও খ্যাতনামা পণ্ডিত টমাস ব্যাবিংটন মেকলে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে তার বিখ্যাত ‘মিনিটস’ বা প্রতিবেদনে বলেন যে, প্রথমে উচ্চ ও মধ্যবিত্তের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষা বিস্তৃত হবে এবং তারপর ধীরে ধীরে তা সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। ফিলটার বা জল পরিশ্রুতকরণ যন্ত্রের জল যেমন নীচে চুঁইয়ে পড়ে, তেমনি পাশ্চাত্য শিক্ষাও ক্রমশ উচ্চ ও মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। এটিই Fil tration theory’ নামে পরিচিত।
16. উডের নির্দেশনামা বলতে কী বোঝো?
উত্তর: কোম্পানির বোর্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে একটি শিক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশনামা জারি করেন। এতে সরকারি উদ্যোগে প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা, একটি স্বতন্ত্র শিক্ষাবিভাগ স্থাপন, তিনটি প্রেসিডেন্সি শহরে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রভৃতির কথা বলা হয়। এগুলি উডের নির্দেশনামা নামে খ্যাত। এর উপর ভিত্তি করেই আধুনিক ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। তাই ভারতে পাশ্চাত্যশিক্ষা বিস্তারের ইতিহাসে একে ‘ম্যাগনাকাটা” বা মহাসনদ বলা হয়।
17. উনিশ শতকের বঙ্গীয় নবজাগরণ বলতে কী বোঝো?
উত্তর : পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সংস্কৃতির সংস্পর্শে এসে উনিশ শতকের বাঙালি সমাজে এক যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদী আলোড়ন দেখা যায়। এর প্রভাবে সমকালীন ধর্ম, সমাজ, শিক্ষা, সাহিত্য, রাজনীতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে যে ব্যাপক, গভীর ও বৈপ্লবিক জাগরণ ঘটে তাকে অনেকে বঙ্গীয় নবজাগরণ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
প্রশ্ন : বিদ্যাসাগরকে Traditional modernizer আধুনিকতার জনক কে, কেন বলেছেন ?
উত্তর: ঐতিহ্যবাদী বিদ্যাসাগর ভারতের সনাতন ঐতিহ্য, মূল্যবোধ ও আদর্শের সঙ্গে পাশ্চাত্যের আধুনিক শিক্ষা-সংস্কৃতি, সামাজিক চিত্তা, নারী প্রগতি, নারী মুক্তি ইত্যাদি ভাবধারায় সমন্বয় সাধন করে সমাজ সংস্কারে ব্রতী হয়েছিলেন। তাই অমলেশ ত্রিপাঠী তাঁকে Traditional modernizer’ বা ‘ঐতিহ্যবাদী আধুনিকতার জনক’ বলে অভিহিত করেছেন।
প্রশ্ন: ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কে, কবে কী উদ্দেশ্যে স্থাপন করেন ?
উত্তর: বড়োেলাট লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের ২৪ নভেম্বর কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপন করেন। উদ্দেশ্য ছিল—ভারতে আগত তরুণ ব্রিটিশ সিভিলিয়ানদের ভারতীয় ভাষা, রীতি-নীতি ও প্রশাসনিক আদব-কায়দা সম্পর্কে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। এই উদ্দেশ্যে স্থানীয় পণ্ডিতদের এই কলেজে অধ্যাপরূপে নিযুক্ত করা হয়।