বানভট্ট রচিত হর্ষচরিত সম্পর্কে টীকা লেখ :
উত্তর : ভূমিকা : গদ্যকাব্য রচয়িতা সুবন্ধুর অল্পকাল পরেই অসামান্য প্রতিভা নিয়ে সাহিত্য ক্ষেত্রে অবতীর্ণ হন হর্ষবর্ধনের সভাকবি বাণভট্ট। তাঁর আলোকসামান্য সৃষ্টি নৈপুণ্যে সংস্কৃত গদ্যকাব্য মহনীয় গুণ গরিমায় ও চমকপ্রদ উৎকর্ষে মহিমান্বিত হয়ে ওঠে। তাঁর গদ্যকাব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হর্ষচরিত ও কাদম্বরী।
বিষয়বস্তু : বানভট্ট রচিত হর্ষচরিত্ আখ্যায়টি আটটি উচ্ছ্বাসে বিভক্ত ।
“হর্ষচরিত’-এর প্রাররে কিছু ভোতে আত্মা বর্ণনা করেছেন। তিনি বাৎস্যায়ন বশে প্রাত সম্ভব রাখল। তাঁর পিতার নাম চিত্রভানু, মাতার নাম রাজসেবী ও পুত্রের নাম তৃষাভট বা পুলিশ। ‘হর্ষচরিতে হর্ষবর্ধনের রাজবংশের জন্ম বৃত্তান্ত, রাজনৈতিক অভিযান, যুদ্ধযাত্রা ও বীরত্ব ব্যঞ্জক নানা ঘটনার অবতারণা করে লেখক হর্ষবর্ধনের মহিমা বর্ণনা করেছেন। আটটি উচ্ছ্বাসে বিভক্ত আমারিকাধর্মী কাহিনী বর্ণনা করে অপ্রত্যাশিতভাবে সমাপ্ত গ্রন্থটি সমাপ্ত করেছেন।
বৈশিষ্ট্য : প্রথমত: হর্ষচরিত মহারাজ হর্ষবর্ধনের কাহিনী হলেও এতে হর্ষবর্ধনের সমগ্র জীবনের কাহিনী চিত্রিত হয়নি। বরং এতে হর্ষবর্ধনের ভগিনীর কাহিনী বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ভগিনী রাজ্যশ্রীকে উদ্ধারের জন্য হর্ষবর্ধনের উদ্যোগও বর্ণিত হয়েছে ‘হর্ষচরিত’
দ্বিতীয়ত : এই আখ্যায়িকায় বাণভট্টের বর্ণননৈপুণ্য চমৎকার। প্রভাকর বর্ধনের মৃত্যুতে প্রিয়জনের শোক, রাজ্যশ্রীর বিয়ে উপলক্ষ্যে উৎসবের আতিশয্য, দিবাকর মিরের আশ্রমে সবধর্ম সমন্বয়ের বর্ণনা, বিদাগিরির বর্ণনা প্রভৃতি বর্ণনার বৈচিত্র্য্যে, মন্ত্রননৈপুণ্যে ও শব্দের ওজস্বিতায় কাব্যধর্মী হয়ে উঠেছে। দিবাকর মিত্রের আশ্রমে সমধর্ম সমন্বয়ের বর্ণনা, বিদ্যাগিরির বর্ণনা প্রভৃতি বর্ণনার বৈচিত্র্যে, মন্ত্রননৈপুণ্যে ও শব্দের ওজস্বিতায় কাব্যধর্মী হয়ে উঠেছে।
তৃতীয়ত: ‘হর্ষচরিত’ রচনাটি থেকে তৎকালীন ভারতবর্ষের রাষ্ট্র ও সমাজ সম্পর্কে অনেক কথা জানা যায়। তাই (A..B. Kieth) কিছু বলেছেন “What he does supply to history is the vivid pictures of the army, of the life of the court, of the secretaries and their relations to the Buddhists and the avocations of a Brahmin and his friends.”
উপসংহার : পরিবেশ চিত্রণে বর্ণনার বাস্তবতা আনয়নে ইতিহাসের নীরস বর্ণনার মধ্যে কাবিকা গুণ সঞ্চারে হর্ষচরিত এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে নিয়েছে।